ফ্রিল্যান্সাররা কেন শ্রমিক অধিকার পায় না | Gig Economy | Explained by Enayet Chowdhury
২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে এক নতুন ধরনের অর্থনীতির উত্থান আমরা দেখতে পাই, যার নাম গিগ ইকোনোমি। ADP Research Institute এর ডাটা অনুসারে ২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিগ ইকোনোমি বিস্তার লাভ করেছে প্রায় ১৫%। ২০২১ সালে পুরো বিশ্বে গিগ ইকোনোমির সাইজ ধরা হচ্ছে প্রায় ৩৪৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৮ সালে ছিল ২০৪ বিলিয়ন ডলার। এবং যা ২০২৩ সালে যেয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৪৫৫ বিলিয়ন ডলারে!

২০১৭ সালে Oxford Internet Institute এর রিপোর্টমতে বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্স মার্কেটে সর্ববৃহৎ দেশ হিসেবে ভারতের ঠিক পরেই জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ! বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ১০০ জনে ৩৬ জন মানুষ গিগ ইকোনোমির অন্তর্ভুক্ত। যেখানে ধারণা করা হচ্ছে ২০২৭ সাল নাগাদ এই সংখ্যাটা ৫০% এ যেয়ে দাঁড়াবে! ৪১% মানুষ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরে গিগ ইকোনোমি বিশেষত ফ্রিল্যান্সিং এ জয়েন করছে। সব মিলিয়ে গিগ ইকোনোমি বলতে আসলে কী বোঝায়? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর ভবিষ্যৎ কী? গিগ ওয়ার্কারদের লেবার সেফটি ইস্যুটাকে আসলে কতটুকু আমলে নেয়া হচ্ছে? আর গিগ ওয়ার্কারদের সমাজে এখন আসলে কোন চোখে দেখা হয়? এই পুরো ব্যাপারটি আমি আজকের লেখাতে ব্যাখ্যা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
Fiverr, Upwork, Uber, Airbnb এই কোম্পানিগুলার তিনটা কমন বৈশিষ্ট্য আছে।
১. এগুলা সাধারণত ফুলটাইম চাকরি দেয়না। এগুলা সাধারণত শর্ট টার্ম কিংবা কন্ট্রাকচুয়াল বেসিসে কাজ দেয়। আপনাকে শর্ট টার্মের জন্য নিয়োগ দিবে এন্ড দেন একদিন আপনাকে টাকা দিয়ে বিদায় করে দিবে। যেমন ফাইভারে ফ্রিল্যান্সারদেরকে একটা নির্দিষ্ট সময় এবং কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়।
২. এইখানে দিনের কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া থাকে না। শুধুমাত্র ডেডলাইন থাকে। এটা কোন সাধারণ ৯টা থেকে ৫টা জবের মতোন কাজ করেনা।
৩. এই কাজগুলো সাধারণত দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তে বসে আপনি করতে পারবেন। শুধুমাত্র আপনার ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে। এইখানে কাজের জন্য কোন বর্ডার নেই। আপনার কোন পাসপোর্ট কিংবা ভিসা লাগবে না! কিংবা মুদ্রা নিয়ে কোন ডিফিকাল্টি আপনি ফেস করবেন না। এই কর্মীরা হচ্ছে অনেকটা রেমিটেন্স কর্মীদের মতোন। শুধুমাত্র তারা বাংলাদেশে বসেই বাইরের কাজ করতে পারছেন। তবে এই কথাগুলা উবার এর মতোন রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না-ও হইতে পারে। যেখানে কোম্পানিটা আন্তর্জাতিক হইলেও তাদের লোকাল ব্রাঞ্চে আলাদা জনবল থাকতে পারে।
এইযে এইরকম একটা দুনিয়া যেইটা ট্র্যাডিশনাল চাকরির কনসেপ্টটাকেই পরিবর্তন করে দেয় এবং পুরো পৃথিবীতে একটা নতুন ধরনের অর্থনীতির সূচনা করে, এই অর্থনীতিটাকেই বলা হয় গিগ ইকোনোমি বা গিগ অর্থনীতি।আর এইখানে যারা কাজ করে বা এমপ্লয়ী হিসেবে থাকে তাদেরকে বলা হয় গিগ ওয়ার্কার। এর মধ্যে যেমন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ ইনক্লুডেড হবে। যেমন ফাইবার যেই কোম্পানিটা ইসরাইলের এবং যে কারণে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের ডাক আসলে আমরা খুব সাবধানে কথাবার্তা বলি।

এর মধ্যে আপওয়ার্ক আছে। উবারের মতোন রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আপনারা যেমনটা জানেন, বাংলাদেশের শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সার নাসিম এবং খালিদ ফারহানই ফ্রিল্যান্সিং করে না(😂)। এছাড়াও বাংলাদেশে আরও ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯৮ জন ফ্রিল্যান্সার আছেন। যাদের মধ্যে মোটামুটি পাঁচ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার অ্যাক্টিভলি এই মুহূর্তে কাজ করতেছেন। ২০১৯ সালের Payoneer দ্বারা প্রকাশিত Global Gig Economy Index এর মধ্যে বাংলাদেশ Year Over Year Revenue Growth এর মধ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছিলো!
২০১৭ সালে Oxford Internet Institute কর্তৃক একটা রিসার্চ করা হয়। যেখানে Fiverr, Freelancer, Guru এবং PeoplePerHour এই চারটা প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন ওয়ার্কারের ওপর স্যাম্পলিং করা হয়। এবং দেখা হয় বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে টপ যে অকুপেশন গুলা আছে এগুলো হচ্ছে এরকম।
1. Creative and multimedia – 61.5%
2. Software development and technology – 14.1%
3. Clerical and data entry(শুধুমাত্র ডেটা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এন্ট্রি দেওয়া এই টাইপের কাজ) – 10.1%
4. Writing and translation(আপনি অন্যের হয়ে কোনো লেখা লিখবেন কিংবা অনুবাদ করে দিবেন) – 9.5%
5. Sales and Marketing – 4.7%
এইটা থেকে বোঝা যায় টপ প্রায়োরিটি দেওয়া হয় এই ক্রিয়েটিভ অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া Genre টার মধ্যেই। যেটার ভিতর গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ভিডিও এডিটিং এর মতন কাজ গুলা পরবে। এন্ড এই কারণেই এই পেশাগুলোর চাহিদা ভবিষ্যতে আরো অনেক বেশি পরিমাণে বাড়বে বলে ধরা হইতেছে!
বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরের স্টেট মিনিস্টার জুনায়েদ আহমেদ পলক এর দেওয়া তথ্যমতে, এই মহামারির পর থেকে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ এক্সট্রা এই ই-কমার্স সেক্টরের মধ্যে বাংলাদেশে Employed বা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাইছে।

আপনি যদি বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং মার্কেটটার কথা চিন্তা করেন, সেইটার সাইজ বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতোন। যেটা বাংলাদেশের টোটাল ট্রান্সপোর্টেশন ইন্ডাস্ট্রির প্রায় ২৩%! আশা করি এই ডেটাগুলা থেকে আপনারা বুঝতে পারছেন বাংলাদেশের গিগ ইকোনোমি অথবা গিগ অর্থনীতির ব্যাপ্তি বা বিস্তারটা আসলে কতটুকু! প্রত্যেক বছর বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা এনে দেয় কিন্তু তারপরেও অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ থাকে তাদেরকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হয় না!
এইখানে দেখেন একজন একটা কথা বলছে, কাশিম উদ্দিন মাসুম A graphic designer, ফ্রিল্যান্সারদের আশেপাশে যেই মানুষরা থাকে তারা অনেক সময় তাদের যাত্রাটাকে অনেক কঠিন করে ফেলে। আমার প্রতিবেশীরা আমার বাবাকে বলতো আমি সারারাত কম্পিউটারে পর্নোগ্রাফি দেখি। কিন্তু যখন পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ালো এবং আমি অনেক টাকা-পয়সা আয় করতে লাগলাম তখন তারাই আমার প্রশংসা করতে লাগলো!

প্রথম কথা কম্পিউটারে এটা কি দেখার কথা বলা হইতেছে, সেই সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র কোনো আইডিয়া নাই। কিন্তু আমি এইটুকু বলতে পারি, আপনার কম্পিউটার যদি জানালার কাছাকাছি হয় সেই কথা ভাবলে তো টেইলর সুইফট খোলা জানালা দিয়ে ফুলটাইম রিলেশনশিপেও চইলা গেছিলো (Taylor Swift – You Belong With Me😂)। সেই হিসেবে আপনি কি করতেছেন জানালা দিয়ে আপনার প্রতিবেশীরা সেটা যদি দেখতে পারে সেটা এমন কোনো আহামরি ব্যাপার না। এইক্ষেত্রে আপনি আপনার কম্পিউটারের সেটিং আমার বাসার মতো করে ফেলতে পারেন(এইটা দেখতে চাইলে ইউটিউবের এই লিংকটাতে যান, লিখা ক্যামনে বোঝাবো বলেন…?😕 Link with exact timing of this clip:https://youtu.be/quSmAcRePak?t=311) । আমি এ ব্যাপারে একটা টিউটোরিয়ালও চাইলে আপলোড দিতে পারি😉।
দ্বিতীয় কথা, ফ্রিল্যান্সাররা আসলেই কিছু সমস্যায় পরে। Akhmetshin et al.2018, Journal of Entrepreneurship Education এর মধ্যে একটা রিসার্চ পাবলিশ করে। ঐখানে দেখানো হয় ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে Irregular Income বা অনিয়মিত আয়। রাশিয়ান ফেডারেশনের ৫৪% ফ্রিল্যান্সার ঠিক এই সমস্যাটার মধ্যে পরে! দ্বিতীয় অবস্থানে আছে হাই কম্পিটিশন যেটা ২৭% ফ্রিল্যান্সার বলসে। নিড অফ সেল্ফ ডিসিপ্লিন, নিজে নিজে ডিসিপ্লিন বা নিয়মকানুন মেনে চলার অভ্যাসটার সমস্যায় পরে ২২%। Low Income বা কম আয়ের সমস্যায় পরছে ২১%। এছাড়াও আরও কিছু সমস্যা আছে যার মধ্যে ওভারলোডেড শিডিউল, কিংবা Non-standard অর্ডারের এর মতো জিনিসগুলা অন্তর্ভুক্ত।

২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের ৪৬ জন ফ্রিল্যান্সারের উপর একটা ইন্টারভিউ করা হয়।

ওই ৪৬ জনের মধ্যে ২৯ জনই বলসেন তারা ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে যে স্বাধীনতাটা উপভোগ করেন এইটা কে ওরা অনেক বেশি দাম দেন! পরের কোশ্চেনে ওদেরকে জিজ্ঞেস করছিলো আপনারা কি এটাতে সুখী নাকি সুখী না। ৩৩ জন মানুষ বলছে ওরা সুখী(৭১.৭%)। তারমানে এইটা ৫০% এর থেকেও বেশি! এইক্ষেত্রে ভালো ধরা যায় বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং কইরা ওরা শান্তিতেই আছে। লাস্ট কোশ্চেন ছিলো আপনারা ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে আসছেন কী জন্য(?)। এর মধ্যে ৪৬ জনের মধ্যে ২৪ জনই বলসে, ওরা আসলে নতুন একটা বিজনেস স্টার্ট করতে চাইছিলো এন্ড এই কারণে ওরা ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু করছে। ওই ৪৬ জনের মধ্যে ২৫ জন যা ৫৪.৩% টোটাল ইন্টারভিউয়ের, ওরা শিকার করছে যে এখানের ইনকামটা আসলে Stable না। একসময় বারে এক সময় কমে। জিজ্ঞেস করা হইসিলো পেমেন্ট সিস্টেমের মধ্যে কোন রিস্ক আছে কিনা। এর মধ্যে বিশজন বলসে কোনো ধরনের রিস্ক নাই তেমন কোনো, ৪৩.৫ এটা। তবে সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হইতেছে, এই ইন্টারভিউয়ের মধ্যে ফ্রিল্যান্সাররা অনেকেই স্বীকার করছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারদের আয় প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার থেকে কম!

ঠিক এই সার্ভেরই মোট ১৭ জন পার্টিসিপেন্ট অর্থাৎ ৩৭% এর মতোন, তারা ১০,০০০ থেকে কম টাকা আয় করতো! বাংলাদেশে পেপাল এর অনুপস্থিতি থাকা এটা কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক বড় একটা প্রতিবন্ধক হিসেবে ধরা হয়।
এবার আমি আপনাদেরকে আরেকটা পেপার এর কিছু Stat দেখাবো যেটা ২০১৭ সালের Rahman and Rahman পাবলিশ করছিলো। এইটার মধ্যে দেখানো হইছিলো, ফ্রিল্যান্সারদের যে শিক্ষাগত যোগ্যতাটা আছে ওইটার সাথে ওদের টাকা আয় করার কোনো কো-রিলেশন আছে কিনা। এবং দুই, ফ্রিল্যান্সাররা কতক্ষণ সময় ধরে কাজ করতেছে, এইটার অনুপাতে তাদের টাকা আয়ের কোনো তারতম্য হয় কিনা।

আপনি যদি টাইম এর বেসিসে চিন্তা করেন, তাইলে দেখবেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করেন এমন ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে, ৭.৭৭% ফ্রিল্যান্সার ওরা সপ্তাহে চল্লিশ ঘণ্টার বেশি কাজ করে থাকেন! তার মানে আপনি কম পরিশ্রম করে বেশি টাকা আয় করবেন এইটার চেয়ে মোটামুটি খাটুনি দিয়ে আপনি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে পারবেন, এই এক্সাম্পলটাই কিন্তু এইখানে বেশি!

সুতরাং যারা ফ্রিল্যান্সার, ওদের যে কমসে কম একটা খাটুনি দিতে হয় বা পরিশ্রম করতে হয় এই জিনিসটা দেখা যায় আমাদের সমাজের মধ্যে অনেক উপেক্ষিত থাকে। সবাই শুধুমাত্র টাকা বা ডলারের নাম্বারটাকেই অনেক বেশি পরিমাণে ফোকাস করে। এইটা করলে আমি কোনরকমের দোষ দেখি না। তার কারণ পরীক্ষিতভাবেই দেখা যায় ভিডিওর থাম্বনেইলের মধ্যে যদি ডলারের নাম্বার দেয়া হয়, ভিডিওর মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে ভিউ আসে! এইগুলা কোন ব্যাপার না…😂
খেয়াল করলে দেখবেন, আমি এতক্ষণ যাবৎ আপনাদেরকে যে প্রবলেমগুলার কথা বললাম, এটা কিন্তু ফ্রিল্যান্সারদের নিজেদের পক্ষের লজিক থেকে আমি কথাগুলো বলছি(ফ্রিল্যান্সারদের পক্ষের যুক্তি বেশি দিয়া ফেলসি😅)। এখন ফ্রিল্যান্সারদের বিপক্ষের কিছু লজিক যদি আপনি চিন্তা করেন যে ফ্রিল্যান্সাররা আসলে কী ভুল করতে পারে। এ ব্যাপারে Das et al. 2018 একটা পেপার এর মধ্যে দেখাইছেন যে ফ্রিল্যান্সারদের নিজেদের কিছু কমন মিসটেক থাকে। যেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা প্রথমদিকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে তাদের ক্ষেত্রেই হয়। নতুন ফ্রিল্যান্সাররা জব খোঁজার জন্য যে চারটা ভুল বেশিরভাগ সময় করে থাকেন তার মধ্যে:-
1. Freelancers with bad writing skills, এইটা ৩৭.৮%!
2. Copy paste job proposals. আমরা জানি আমরা অনেক কিছুই কপি পেস্ট করি। ল্যাব অ্যাসাইনমেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছুই কিন্তু এই জাতীয় জিনিস যখন ইন্টারভিউয়ের মধ্যে আসে ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে ৪৪.৪% জায়গায় কপি-পেস্ট জব প্রপোজাল দেখা গেছে, যেটা মোটেই কাম্য নয়।
3. Did not read the entire job description, জব ডেসক্রিপশন এর মধ্যে আপনার কাছে কী চাইছে সেটা না পইড়াই আপনি এপ্লাই করে দিছেন, এই রকম দেখা গেছে ৫৩.৩%।
4. Buyer এর সাথে শিডিউল ম্যাচ করা নিয়ে গ্যাঞ্জাম লাগছে এইরকম আছে ২.২%।
তার মানে এই চারটা কেস নিয়ে আসলে যারা এমপ্লয়াররা আছে তারা ফ্রিল্যান্সারদের উপরে বিরক্ত! আর আমাদের ফ্রিল্যান্সারদেরকে এই চারটা জায়গায় অবশ্যই উন্নতি করতে হবে।

এইবার আসা যাক গিগ ওয়ার্কারদের সম্পর্কে সবচেয়ে বড় একটা জিনিস, তাদের কর্মক্ষেত্রে অধিকার সংক্রান্ত যেই জিনিসগুলা সেইগুলাকে ঠিক মতোন অ্যাড্রেস করা।
আপনাদেরকে কিছু এক্সাম্পল দেই। মে দিবস তো আপনারা সবাই পালন করছেন। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আমরা সবসময় কোনো না কোনো কথা বলি। বাংলাদেশের লেবার রাইট প্রোটেক্ট করা হয় Bangladesh Labor Act 2006 এর আন্ডারে। এইটার ১০০ এবং ১০৮ নম্বর ধারায় বলা আছে আপনি কোনো শ্রমিককে ৮ ঘন্টার বেশি কাজ করাইতে কোনোদিন পারবেন না। এবং ওভারটাইম যদি ইনক্লুড করেন সেটা ১০ ঘন্টা ম্যাক্সিমাম যাইতে পারবে। ধারা ৩৪ অনুযায়ী, চাইল্ড লেবার বা শিশুশ্রমকে অবৈধ ঘোষণা করা হইছে। যদি কোন প্রেগন্যান্ট মহিলা থাকে তার ক্ষেত্রে ডেলিভারি হওয়ার পরে ৮ মাস পর্যন্ত তাকে কর্মক্ষেত্রে আনা যাবে না। এবং সাথে সাথে তাকে এই মাতৃত্বকালীন যে বেনিফিট গুলা আছে এবং যথাযথ পেমেন্ট এই সবকিছু এনশিওর করতে হবে এবং তাকে দিতে হবে। যদি কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হয় কিংবা তার কোনো ইনজুরি ঘটে বা আহত হন তিনি, তাকে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার খরচও কোম্পানির পক্ষ থেকে বহন করতে হবে। এছাড়া যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আপনার ট্রেড ইউনিয়ন করার সুবিধা কিংবা অধিকার এগুলা আপনার শ্রমিকদেরকে দিতে হবে। এইগুলা অন্যান্য চ্যাপ্টারে বলা আছে।
এখন প্রশ্ন দাঁড়ায় এগুলা তো রেগুলার শ্রমিকদের জন্য বলা। আপনার যদি গিগ ওয়ার্কার হয় তারা তো কোনো কোম্পানির আন্ডারে না। তারাতো ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেছে। নিজেরা নিজেদের মতোন কাজ করতেছে। এই আইনটা আসলে ওই গিগ ওয়ার্কার বা গিগ ইকোনোমির ভিতরে যে এমপ্লয়ীরা আছে তাদের ক্ষেত্রে আসলে প্রযোজ্য না। এইরকম ক্ষেত্রে আপনি কী করবেন? কোম্পানিরা তো আসলে তাদের কাছ থেকে বেনিফিট বা প্রফিট কামায় নিতেছে। কিন্তু তাদের অধিকারও তো আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে! এইক্ষেত্রে আসলে কী হইছে পুরা দুনিয়াতে দেখেন।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে Proposition 22 নামে একটা ভোটাভুটি হয়। ওইখানে সর্বসম্মতিক্রমেই এইটা ঠিক করা হইছে, তারা একটা থার্ড ওয়ার্কার ক্লাসিফিকেশন করবে যার মধ্যে এই গিগ ওয়ার্কারদেরকে ওরা রাখবে। ওদেরকে বলা হবে কন্ট্রাকটর।ওদেরকে ডিরেক্ট একদম ফুলটাইম এমপ্লয়ীর মতোন সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস ওদেরকে দিতে হবে, যেমন আপনাকে ওদেরকে একটা নুন্যতম বেতন বা Minimum wage দিতে হবে। Mileage reimbursement, সে যতটুকু গাড়ি চালাইছে তার উপর তাকে একটা ফি দেওয়া। এবং অন্যান্য আরো কিছু সুযোগ-সুবিধা। এইটার মাধ্যমে কোম্পানি আর গিগ ওয়ার্কার যারা আছে দুইজনেরই আসলে সুবিধা হইসে। যেমন: কোম্পানিগুলা যদি ওদেরকে ফুল টাইম রাখতো, তাইলে ওদেরকে কিন্তু ফুল টাইম এমপ্লয়ীদেরকে ওরা যেরকম Paid sick time দেয় যে ওরা অসুস্থ হইছে, তার পরেও ওকে আমার বেতন দিতে হবে। এইরকম জিনিসগুলা গিগ ওয়ার্কাররা, যারা ফ্রিল্যান্সার ওদের ক্ষেত্রে করতে হবে না। কিন্তু কিছু জিনিস বেঁধে দেয়া হইছে। যেমন: লোকাল যে মিনিমাম ওয়েজ আছে অর্থাৎ ন্যূনতম বেতন, তার ১২০% অবশ্যই ড্রাইভার যত ঘন্টা ধরে গাড়ি চালায় তার উপরে দিতে হবে। ড্রাইভার যতো মাইল গাড়ি চালায় তার উপরে প্রতি মাইলের জন্য ০.৩ ডলার খরচ তাকে দিতে হবে। যেই ড্রাইভার গড়ে প্রতি সপ্তাহে ১৫ ঘন্টার থেকে বেশি গাড়ি চালাইছে তাকে হেলথ ইন্সুরেন্সের সুবিধা দিতে হবে। ড্রাইভার যদি কোনো কারণে ইনজুরিতে পরে বা আহত হয়, ওই সময়টাতে তার যে টাকা পাওয়ার কথা ছিল ওই Cost টা তাকে দিতে হবে, এবং তার মেডিকেলের কারণে চিকিৎসা বাবদ যেই খরচটা হয় সেই খরচটাও কোম্পানিকে বহন করতে হবে। এইরকম গিগ ওয়ার্কারদেরকে সুবিধা দেওয়া, এটা ক্যালিফোর্নিয়াতে হইছে। আশা করি এই ফ্রিল্যান্সাররা আসলে কীভাবে কাজ করবে এবং তাদের কাজের পরিবেশ কী হবে, তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলা কী হবে, এই ব্যাপারটা নিয়ে বাংলাদেশেও কাজ শুরু হবে এবং পরবর্তী পুরো বিশ্বের মধ্যে এই গিগ ওয়ার্কারদেরকে রিকোগনাইজড করা, একজন পূর্ণ এমপ্লয়ী না হইলেও ন্যূনতম এমপ্লয়ী হওয়ার যে মান-মর্যাদা সেইটা যাতে তাকে দেয়া হয় সেটা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে!
ওকে মিম রিভিউ!

দেখেন আমি একটা জিনিস সবসময় বলি জীবনে সুখী হওয়া আসলে কোনো কঠিন জিনিস না প্রথমে আপনি বুয়েটে ভর্তি হন তারপরে বুয়েটের টিচার হন তারপর আমার মতন একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেন যেইখানে ১০০কে সাবস্ক্রাইবার আপনি নিয়া আসবেন।(Inspired by DAVIE504) ব্যস এতেই আপনি একজন সুখী মানুষ হিসেবে পরিগণিত হবেন।
Random guy: কিন্তু আপনার তো এখনো ভাই ১০০কে হয় নাই।
Me: 😒😒 (*থাপ্পর)

এই ড্রয়িংটা পুরাপুরি সেই হইছে।এই ড্রয়িংটা দিয়ে আমি অনেক নস্টালজিক হয়া গেছি আসলে… বেশ আগে আমি এইরকম হেডফোন আর মাইক্রোফোন, পাইলটের মতোন দেখতে জিনিস নিয়া আমি কথাবার্তা বলতাম।

বাট ওইদিন এখন আর নাই। এখন আমার হাতের মধ্যে এই মাইকটা চলে আসছে এন্ড এইটা নিয়েই অনেক ট্রল শুরু হইসে।

যাই হোক থ্যাংক ইউ Abir Muhammed এই সুন্দর ফ্যান আর্টটার জন্য।

আপনারা যারা এই গাড়িটার মডেল সম্পর্কে জানেন না এইটা টেসলা সাইবার ট্রাক। বাংলাদেশে টেসলা আসলে(Ashle), আসলে(Ashole) রকম ঘটনা গুলাই হবে বেশিরভাগ সময়! লকডাউনের মধ্যে মাইক্রোবাসে চড়ে আমরা এমন অনেক মানুষকে দেখছি, যারা এয়ারপোর্ট নাকি এর আগে জীবনে কোনোদিন দেখে নাই এন্ড এই এক্সকিউজে এয়ারপোর্ট দেখতে আসছেন!
দ্বিতীয় কথা এম্বুলেন্সের মধ্যে যাত্রী পরিবহন করা, এইটা তো এখন খেলা হয়া গেছে! সো টেসলা সাইবারট্রাক আসলে বাংলাদেশে গরু তোলার কাজেই বেশিরভাগ জায়গায় ব্যবহার হবে। কারণ এইটা তো ট্রাক নাকি রে ভাই, ট্রাকের কাজ তো গরু তোলাই!
ওকে reddit এ আমরা ৫০০০ মেম্বার ক্রস করে ফেলসি! আপনাদের সবাইকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে অসংখ্য অসংখ্য পরিমাণে ধন্যবাদ।

এই সাবরেডিটটাকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ সাবরেডিটে পরিণত করার জন্য।(NSFW not counted) শীঘ্রই হয়তো আমরা এইটাকে বাংলাদেশের বৃহত্তম সাবরেডিটে কনভার্ট কইরা ফেলতে পারবো, যদি আপনারা এইভাবে জয়েন করতে থাকেন। অনেক মজা হয় রে ভাই আপনি একটু আইসা দেখেন এইখানে, বেশ ভালো লাগে! সাবরেডিটে জয়েন করার লিঙ্ক আমি এখানে দিয়ে রাখসি, আপনারা চাইলে এইখান থেকে দেখে আসতে পারেন।
এনায়েত চৌধুরীর সাবরেডিট: https://www.reddit.com/r/Enayet_Chowdhury/
আজকের ভিডিও এই পর্যন্তই। গিগ ইকোনোমি সম্পর্কে আপনারা যদি আরো ভালো মতন জানাশোনা করতে চান তাহলে টম নিকোলাসের গিগ ইকোনোমি সম্পর্কে একটা আলাদা ভিডিও আছে, আপনারা ওইটা দেখে আসতে পারেন। আমি ওইটার লিংকও এখানে দিয়ে দিলাম।
Tom Nicholas Gig Economy video:https://www.youtube.com/watch?v=0kKa…
আশা করি আপনারা গিগ ইকোনোমি সম্পর্কে বেশ ভালোমতোন বুঝতে পারছেন এই ভিডিও দেখে। পেগাসাস আর ইন্ডিয়া নতুন একটা আইটি রুল করছে ওইটা নিয়া কিছু কথাবার্তা বলা দরকার কারণ আইটি রুল সম্পর্কে আমার অনেক বেশি পরিমাণে আগ্রহ থাকে। আপনারা যদি ব্লগে নতুন হয়ে থাকেন এবং তাহলে আরো কয়েকটা আর্টিকেল পড়ে দেখবেন, আশা করি ভালো লাগবে। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
পুরা ভিডিও দেখেন ইউটিউবে!
Research Affiliates:
Labid Rahat: https://www.youtube.com/channel/UCTio…
Alif Arshad: https://www.facebook.com/alif.arshad.b
For Gaining more knowledge on this topic:-
• The Global Gig-Economy Index
• Struggles of being a freelancer in Bangladesh
• Where are online workers located? The international division of digital gig work
• Home delivery boom churns out 1 lakh jobs
• A Look Back at the Year 2020 Was: Review by Uber
• Motorbike ride-sharing alleviates Dhaka traffic chaos
• ‘Uber-Pathao’ ride-share’s impact on Dhaka
• A Study on Bangladeshi IT freelancers: A Survey
• The Disadvantages of Freelancing
• Freelancing as a type of entrepreneurship: Advantages, disadvantages and development prospects
• Factors, Impacts, Problems and Solutions of Freelance Earning in the context of Bangladesh
• How gig economy is reshaping careers
• The Future of Employment – 30 Telling Gig Economy Statistics
• Gig Economy – The Economic Backbone of the Future?
• The gig economy has ballooned by 6 million people since 2010. Financial worries may follow