তালিবানের কাবুল দখল যে কারণে অবশ্যম্ভাবী ছিল | Taliban fighting in Afghanistan | Enayet Chowdhury
৯ সেপ্টেম্বর,২০০১ সাল।
এই দিনটিকে আফগানিস্তান এর স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ধরা হয়।এর কারণ এই দিনে আফগানিস্তানের বিখ্যাত নর্দার্ন অ্যালায়েন্স এর নেতা আহমাদ শাহ মাসুদকে হত্যা করা হয় যাকে পানশির এর সিংহ বলা হতো।

এই পানশির উপত্যকার(পাঞ্জশির উপত্যকা) নাম আপনি কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই শুনেছেন। এটা হলো আফগানিস্তান এর ভিতরে থাকা সেই উপত্যকা যেটা কিছুদিন আগে হওয়া তালিবানের আফগানিস্তান দখলকে মেনে নেয়নি এবং এটির বিরোধিতা করেছে। পানশির এর বর্তমান এই নেতার নাম হলো আহমাদ মাসুদ(Ahmad Massoud), যিনি শহীদ আহমাদ শাহ মাসুদ এর ছেলে, যিনি বেচেঁ থাকলে আজকে আফগানিস্তানের চেহারাই নাকি অন্যরকম হতো বলে ধরা হয়।

পানশির উপত্যকার সেই আহমাদ মাসুদ এবং আফগানিস্তান এর তালিবানদের মধ্যে ধর্মীয় প্রেক্ষাপট থেকে তেমন কোনো পার্থক্য নাই।আফগান মুজাহিদদের মত আহমাদ মাসুদের বাবাও সোভিয়েত এর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন,যেই আফগান মুজাহিদদের অনেকেই পরবর্তীতে তালিবান গঠন করে।

সেই হিসেবে,আপনি যদি তালিবানদের সাপোর্ট করেন,তাহলে আপনার পানশির উপত্যকার সেই ন্যাশনাল রেসিসটেন্স ফন্ট অফ আফগানিস্তান(National Resistance Front of Afghanistan) কেও সাপোর্ট করা উচিত।
কিন্তু তারা তো তালিবানদের সাপোর্ট করে না। এখানে শুধু ধর্মের চশমা দিয়ে পুরো ব্যাপারটিকে দেখলে হবেনা, এর পিছনে আরো অনেক বড় জিওপলিটিকাল ইস্যু(Geopolitical issue) বা ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা জড়িত। আজকে এই পুরো ব্যাপারটিই আমি আপনাদের কাছে ব্যাখ্যা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।😃
আমি আশা করি,আপনারা ইতোমধ্যে এগুলো ১০০ বারের বেশি শুনে ফেলেছেন,”তালিবানদের উত্থানের পেছনে পরোক্ষভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে“।আমি ছোট্ট করে একটু বলে রাখি,আশির দশকে যখন স্নায়ুযুদ্ধ বা ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলছিল,ওই সময়ে সোভিয়েত-রাশিয়া এবং আমেরিকা উভয়ই আফগানিস্তানে এসেছিল।

সোভিয়েত-রাশিয়া আফগানিস্তান কে কমিউনিজম(communism) সাপোর্ট করার প্রস্তাব দেয়। অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিরোধিতা করে আফগানিস্তানের নিজেদের পক্ষের লোকদের সাহায্য দেওয়া শুরু করেছিল। এখানে, দুই দেশ যুদ্ধ করছে,কিন্তু সেই যুদ্ধটা নিজেদের দেশের মধ্যে না করে বরং অন্য একটি দেশের মধ্যে গিয়ে করছে,এই ধরনের যুদ্ধকে বলা হয় প্রক্সি ওয়ার(Proxy War)। এরকম প্রক্সি ওয়ার এর উদাহরণ আরো অনেক আছে।
রোনাল্ড রেগন (Ronald Reagan) এর সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই আফগানিস্তানের মুজাহিদীনদের কে তিন প্রকারের সমর্থন দিচ্ছিল।
১. মিলিটারি বা লজিস্টিক সাপোর্ট
২. প্রযুক্তিগত সাপোর্ট , এবং সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ
৩. আদর্শগত সাপোর্ট

তখনকার সময়ের পাক-আফগান এলাকাগুলোতে অসংখ্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো যেখানে সিআইএ (CIA) সমর্থিত পাঠ্যপুস্তক পড়ানো হতো।
ওইখানে যোগ-বিয়োগ সংক্রান্ত অংক শেখানো হতো বন্দুকের দ্বারা,যেমন:পাঁচ টা বন্দুক+পাঁচটা বন্দুক= দশটা বন্দুক।
ইংরেজি লেটারের মধ্যে পড়ানো হতো J for Jihad । এভাবে তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সুবিধার জন্যে আফগান শিশুদের সাইকোলজিকাল(psychological) বা মানসিক ভাবে অনেকটা manipulate করেছে, যাতে ওরা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নিজেরাই যুদ্ধ করে,এবং এতে ওরা অনেকটা সফলও হয়েছে বলা যায়।

এরকম আদর্শভিত্তিক সমর্থন অন্যধরনের যুদ্ধ থেকে কেন ভিন্ন,সেটা অন্য একটি দেশের উদাহরণ এর মাধ্যমে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়।জাপান ১৯৪৩ সালের পহেলা আগস্ট অং সাং সূচির পিতা অং সাং কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ঘোষণা করে।
এবং বার্মার স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং নিজেরা বার্মায় একটি স্বল্প ক্ষমতাধর সরকার প্রতিষ্ঠা করে।জাপানের সহযোগিতায় অং সাং সে সময়ে “বার্মা ন্যাশনাল আর্মি” প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন,

(পল্টিবাজি 101) কিন্তু একটি সময়ে গিয়ে অং সাং জাপানের পক্ষ ত্যাগ করে তাদের বিরোধী ব্রিটিশদের পক্ষ নেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালের ২৭ শে মার্চ ব্রিটিশদের সহযোগিতায় অং সাং জাপানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটান। ১৯৪৬ সালের সেপ্টেম্বরে এই ব্রিটিশরাই তাকে বার্মার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করে।খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন,আজকে আপনি ঠিক কয়টা ব্রিটিশ সৈন্য মিয়ানমার এর ভিতরে দেখবেন?
জাপানিজদেরকে ধর্মীয়ভাবে oppose করে পাঠ্যপুস্তক লিখে শিখানো হয়েছে বার্মার বাচ্চাদেরকে,এরকম কেস আপনি কয়টা পাবেন? রেফারেন্স: বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক(আলতাফ পারভেজ)
ওইসময় এরকম আইডিওলোজিকাল(Idiological) বা আদর্শগত সাপোর্ট অতটা জনপ্রিয়ই ছিল না,আর এটার ভয়ংকর দিকটি উন্মোচিত হয়েছে সেই আশির দশকের পরবর্তী সময় থেকে।যেটি বুঝিয়েছে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস বা আদর্শ নিয়ে খেলা করার ভয়াবহতা আসলে কতটুক!এভাবেই বুঝা যায় এই দুটো যুদ্ধ আলাদা জিনিস হলেও আইডিওলজিকাল সমর্থন একটি দেশকে সাইকোলজিকালি ধ্বংস করে দিতে পারে।
তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান মুজাহিদদের অনেক প্রিয় হলেও একটা সময় তাদের মধ্যে বৈরিতা বা শত্রুতা শুরু হয়। ১৯৯০ সালের ২ আগস্ট,ইরাকের সাদ্দাম হোসেন কুয়েত আক্রমণ করেন।

এই আক্রমণের জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চায় সৌদিআরব, এবং তখন মক্কা মদিনার পবিত্র ভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য এসে অবস্থান করে যেটা ওসামা বিন লাদেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি।ঐখান থেকেই তাদের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়েছে।ওইসময় থেকে CIA লাদেন এর জন্যে একটা আলাদা ইউনিটই চালু করে।লাদেন তখন বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াতো। এরই মধ্যে একসময় তিনি আফগানিস্তানের জালালাবাদ এ আসেন, আর ওই সময় তালিবান কিন্তু আফগানিস্তানের অনেক বড় একটা এলাকা দখল করে।তখন প্রতাবশালী নেতা ছিলেন মোল্লা ওমর।

তখন ঐ দখলকৃত জায়গাটিকে ইসলামিক এমিরেট অফ আফগানিস্তান( Islamic Emirates of Afghanistan) নামে ভূষিত করা হয়।
এই তালিবানের ব্যাপারে কিছু ফ্যাক্ট বলি আমি আপনাদেরকে!
সম্প্রতি ক্ষমতা দখলের আগে ১৯৯৬-২০০১, এই সমযয়ে আফগানিস্তানের পাওয়ারে তালিবানরা ছিল। ২০০১-২০২১ এর যে আফগান সরকার যেটা সর্বজন স্বীকৃত, সেটাকে তালিবানরা কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি।যদিও তারা একটি চুক্তি করেছিলো যেটাকে “দোহা চুক্তি ২০২০” বলা হয়।
ওই চুক্তির আওতায় আফগানিস্তানের ভিতরে তারা সরকার এর সাথে অনেকবার বৈঠক এ বসেছে।
আরেকটা কথা,আফগানিস্তানের তালিবান,
আর পাকিস্তানের তালিবান,
দুটোই আলাদা আলাদা সত্তা, এদের মাঝখানে পার্থক্য আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু অনেক আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য সরিয়ে ফেলতে চেয়েছিল,১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখটি প্ল্যান করা ছিল সেই কাজের জন্যে।
কিন্তু ২০২০ সালের জুলাই মাসে হাউস আর্ম সার্ভিস ট্রাম্পের কাছ থেকে সেই ক্ষমতাটি সরিয়ে নেয়।
কারণ তখন আফগানিস্তানের মিলিটারি ফোর্স এর উপর অনেক বেশি পরিমাণে হামলা হচ্ছিলো যেটা গত ১৯ বছরের তুলনায় সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল,এমনকি অনেক বেসামরিক নাগরিক ও এতে মারা যাচ্ছিল।তাই ট্রাম্প কে এটা করতে দেওয়া হয়নি।
এবার আসা যাক,তালিবানদের কারা কারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে!
১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালিবানের যে সরকার ছিল,সেটাকে তিনটি দেশ সমর্থন দিয়েছিল।
১. পাকিস্তান
২. সৌদি আরব
৩. সংযুক্ত আরব আমিরাত
বর্তমানে যেসকল দেশ তালিবানদেরকে মোটামুটি সমর্থন দিচ্ছে সেগুলো হলো, তুরস্ক যে নিজে ন্যাটো (NATO) এর একজন Ally, চীন,পাকিস্তান এবং ইরান।

অপরদিকে যারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়,তাদের মধ্যে অন্যতম দুটো দেশ হলো কানাডা এবং যুক্তরাজ্য। রাশিয়া এবং ভারত এখনো কোনো বড় ধরনের মতামত দেয়নি।আপনি যদি বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করেন, ২০১০ সালে USA বাংলাদেশকে বলেছিল আফগানিস্তানে বাংলাদেশী সৈন্য পাঠাতে,কিন্তু বাংলাদেশ সেটিকে নাকচ করে দেয়।
কিন্তু বাংলাদেশের কিছু এনজিও আফগানিস্তানে কাজ করছে,যেমন ব্র্যাক বিগত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে কাজ করছে।তালিবান আসার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সরকার যদি জনগণের সরকার হয় তাহলে বাংলাদেশের দরজা তাদের জন্যে সবসময় খোলা থাকবে। তবে CTTC এর চিফ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, তালিবান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের দেশে যদি কোনো আক্রমণাত্মক কাজ যদি কোনো তালিবান সমর্থক ঘটাতে চায়,তাহলে সেটা তাকে করতে দেওয়া হবে না।
এবার তালিবান এবং আফগানিস্তানের মিলিটারি ফোর্স এর মধ্যে একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ আমি আপনাদেরকে দেখাই। যদি সাইজ বা আকারের দিক থেকে চিন্তা করা হয়,তাহলে আফগান মিলিটারি তালিবান এর থেকে অনেক বড়, বলা হয় প্রায় তিনগুণ বড়।
কিন্তু ফান্ডিং বা আর্থিক তহবিল এর দিক থেকে চিন্তা করলে দেখা যায়,তালিবানদের অনেক বড় একটা আর্থিক তহবিল আছে।
তবে সাম্প্রতিক খবরগুলো দেখলে বুঝা যায়, তালিবানের যে মিলিটারি কৌশল যা তারা অনেক বড় সময় ধরে অবলম্বন করে আসছে,সেই ব্যাপারটির দিকে খুব একটা আলোকপাত করা হয়নি যেটা একটা ব্রিলিয়ান্ট মুভ ছিল তালিবানদের জন্যে। ক্যাসিলোর(Castillo) একটা মিলিটারি থিওরি আছে যেটাকে বলা হয় থিউরি অফ মিলিটারি কোহেশন (THEORY OF MILITARY COHESION)।ওইখানে ২ টা বিষয় বলা হয়েছে।
১. যুদ্ধক্ষেত্রে আপনার মিলিটারি ফোর্স কতটা শক্তিশালী।
২. যুদ্ধে আপনার ফোর্স দেখবে যে আপনি যুদ্ধটা হেরে যাচ্ছেন, তখন তারা আসলে নিজেদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে নাকি একসাথে থাকবে, এটার উপর অনেকটাই নির্ভর করে আপনি যুদ্ধ বিজয় করবেন কিনা, সে জিনিসটা।
আফগান মিলিটারি ফোর্স এর ক্ষেত্রে চারটা বিষয় এখানে আসে।
১. তালিবান প্রথমেই আফগান মিলিটারিকে আইসোলেট বা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল, যেটা ক্যাসিলোর থিওরির ২ নম্বর পয়েন্ট। এই বিচ্ছিন্ন করাটা একদিকে যেমন ফিজিকাল ছিল, অন্যদিকে তেমন সাইকোলজিকালও ছিল। আফগান সরকার বা আশরাফ গণি, উনারা কিন্তু আফগানিস্তানে যে ছোট ছোট চেকপোস্ট গুলো ছিল, ওগুলোকে দখল করে নিয়েছিল। এবং তালিবান প্রথমেই এই চেকপোস্ট গলোকে কাজে লাগিয়েই মিলিটারি কে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ওগুলো দখলের মাধ্যমে। গ্রাউন্ড লেভেল এ যে কমিউনিকেশনগুলো ছিল, সেগুলোকে অনেক দুর্বল করে দিয়েছিল। যখন এই অবস্থায় আপনি একটা মিলিটারি ফোর্সকে ফেলবেন, তখন তাদের যে খাদ্যের যোগান ছিল সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। মেশিনারি এবং যন্ত্রপাতির যোগান ও সঠিকভাবে হবে না। এমন একটা সময় দেখা যাচ্ছিলো যে আফগান এয়ারফোর্স এর বিমানগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর গোলার আঘাতে নষ্ট হওয়ার চেয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে ও কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে পরে ছিল।
২. কোহেশন কে টার্গেট করে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো। এই জিনিসটা অনেকটা সাইকোলজিকাল ওয়ারফেয়ার এর মত তালিবান করেছে যেটার মত আধুনিক পদক্ষেপ তালিবানদের কাছ থেকে প্রকৃতপক্ষে অপ্রত্যাশিত ছিলো, কিন্তু ওরা রাশিয়ান স্টাইল এ প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে,যেটাকে আমরা ওয়ার প্রোপাগান্ডা বলছি। প্রথমত ওরা আফগান মিলিটারির বিভিন্ন মানুষদেরকে এনে হবসন’স চয়েস দিয়েছে। হবসন’স চয়েস হলো হয়তো আপনি আত্মসমর্পণ করে বেচেঁ থাকেন, অথবা মরে যান। ফেক অ্যাকাউন্ট এবং বট এর মাধ্যমে অনেক প্রোপাগ্যান্ডা ছড়ানো হচ্ছিলো। ৭০% আফগান জনসংখ্যাই মোবাইল ফোন ব্যাবহার করেন,তাই এটা ছড়ালে আফগানিস্তান বড় একটা লাভ পাচ্ছে। দলে দলে আফগান মিলিটারি ফোর্স এর আত্মসমর্পণ করার ভিডিও ওরা সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন অন্য একজন আফগান সৈনিক যখন এই জিনিসগুলো দেখছে,সেই সৈনিক তখন চিন্তা করে যে তার কাছে খাবার নাই, সরঞ্জাম নাই এবং সে এমন একটি আফগান সরকার এর জন্যে যে সরকার নিজেই জানে না যে সে কি করছে! কিছু কিছু জায়গায় তাকে ঘুষও দিতে হচ্ছে! এইরকম একটি সময়ে কেনো আসলে এই মিলিটারি ফোর্স এর জন্যে যুদ্ধ সে যুদ্ধ করবে, সেটা কিন্তু নৈতিকভাবে আপনার কাছে ন্যায্য না। তাই সাইকোলজিকাল ভাবে চিন্তা করলে, আফগান মিলিটারিকে অনেক আগেই ভিতর থেকে ধ্বংস করে দিche তালিবান যাতে ওরা আর দাঁড়াতে না পারে।
৩. মারো এবং এভাবে ভয় দেখাও। আফগানিস্তান কিন্তু অনেকগুলো বড় বড় ট্রাইব বা গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত।সেই গোষ্ঠীর নেতারা, যারা তালিবানের বিরোধিতা করেছে,ওদেরকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে
এবং নির্দিষ্ট করে আরেকটি পেশার মানুষদের হত্যা করা হয়েছে,যেটা হলো আফগান এয়ারফোর্স এর পাইলট। কারণ তালিবান জানে,এই পাইলটদেরকে হত্যা করা হলে আফগান এয়ারফোর্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধ্বসে পরবে।
৪. আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সাথে সন্ধির নামে নিজেদের জন্যে সময় নেওয়া এবং অন্যদের মিলিটারি শক্তিকে ধীরে ধীরে সীমাবদ্ধ করে ফেলা।ইউনাইটেড স্টেটস এবং আফগান সরকার এর কাছে তালিবান এর একটি সন্ধি আলোচনা চলছিল। প্রত্যেকটা আলোচনাতেই তালিবান শর্ত দিতো USA এর মিলিটারি শক্তিকে সংকোচিত করে কমিয়ে ফেলতে হবে এবং তালিবানের টার্গেট এর উপরে USA কোনো আক্রমণ করতে পারবেনা। এইযে আলোচনার মাধ্যমে সময় নেওয়া এবং USA এর মিলিটারি শক্তিকে সংকোচিত করে ফেলা(শেষে বাইডেন এর মাধ্যমে সৈন্য তুলে নেওয়া), এই একটা সময়সাপেক্ষ পদ্ধতিতে না গেলে তালিবান এত সহজে আফগান মিলিটারিকে বিচ্ছিন্ন করতে তো পারতোই না,এমনকি এত তাড়াতাড়ি কবুল দখল করে নেওয়াও সম্ভব হতো না। যদিও আমরা দেখছি কাবুল দখল খুব তাড়াতাড়ি হয়েছে,কিন্তু এর পিছনে অনেক লম্বা কাহিনী এবং তালিবানের কৌশল আছে,এই কৌশলগুলোই আপনাদের কাছে এখন ব্যাখ্যা করলাম।
তো,আজকে এই পর্যন্তই।আমি আশা করি তালিবানের মিলিটারি কৌশল এবং সে সময়েও ১৯৭৯ থেকে আইডিওলোজিকাল সাপোর্ট এর মাধ্যমে তালিবানকে সাইকোলজিকালি তৈরি করা হয়েছে, এই ব্যাপারটা আপনাদের সামনে এখন পরিষ্কার হয়েছে এবং এই আইডিওলোজিকাল সাপোর্টটা ১৯৪৩ সালের জাপান আর ব্রিটেন এর প্রক্সি ওয়ার থেকে ভিন্ন,এ জিনিসটা আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
পুরা ভিডিও দেখেন ইউটিউবে!
Research Affiliates:
Labid Rahat: https://www.youtube.com/channel/UCTio…
Alif Arshad: https://www.facebook.com/alif.arshad.b
For Gaining more knowledge on this topic:-
• The Rise of Taliban Diplomacy
• The Taliban’s Qatar office is a positive step, but not a prologue to peace।Michael Semple
• US welcomes Qatar decision on Taliban name change
• Afghan president asks U.N. to add Taliban leader to sanctions list
• Russia, Pakistan, China warn of increased Islamic State threat in Afghanistan
• US removes separatist group condemned by China from terror list
• Wang Yi Meets with Head of the Afghan Taliban Political Commission Mullah Abdul Ghani Baradar
• Agreement for Bringing Peace to Afghanistan
• Afghanistan’s military collapse: Illicit deals and mass desertions
• Afghan-Taliban peace talks: What’s next?
• The Fall of Kabul: Beginning of Taliban 2.0
• Afghanistan’s Ghani claims narrow win in preliminary presidential vote results
• ‘Intelligence failure of the highest order’ — How Afghanistan fell to the Taliban so quickly
• UN: lift sanctions on Taliban to build peace in Afghanistan
• Afghanistan: Harrowing accounts emerge of the Taliban’s reign of terror in Kunduz
• China to ‘respect choices of Afghan people’ following Taliban takeover
• Iran says U.S. “failure” in Afghanistan a chance for durable peace
• Canada will not recognize Taliban as Afghan gov’t – PM Trudeau
• Afghanistan must not become ‘breeding ground for terror’ once again, PM says
• How Russia’s relationship with the Taliban has evolved over three decades
• What the Taliban takeover of Afghanistan means for India and Pakistan
• Momen: Bangladesh will welcome new Afghan government if it’s of people
• Afghan interpreters: ‘Our colleagues have been beheaded. We are next’
• Billions spent on Afghan army ultimately benefited Taliban
• Afghanistan’s Security Forces Versus the Taliban: A Net Assessment
• The Afghan Military Was Built Over 20 Years. How Did It Collapse So Quickly?
• How the Taliban did it: Inside the ‘operational art’ of its military victory
• Saleh and Massoud: The Afghan leaders challenging the Taliban
Money Heist,Sri lanka,Poverty Porn এই ব্লগ গুলো কই? পাচ্ছিনা
খুব দ্রুতই আপলোড হবে। একটু ধৈর্য্য ধরুন…😃