২০ ভাগ লোক কেন এখনো পাকিস্তানকে সমর্থন করে? Support for Pakistan | Explained by Enayet Chowdhury

বাংলাদেশি একজন খাঁটি হাম্বার বক্তব্য, “পাকিস্তান-বাংলাদেশ, দোনোডা একই দেশ। দোনোজন ভাই ভাই। যেই হারুক-জিতুক, আমাদের কোনো সমস্যা নাই। আমাদের দেশ পাকিস্তান হিসেবে দুর্ভাগ্য ভাবে আমাদের দেশটা ভাগ হয়ে গেলো, এটাই আমাদের কষ্ট!”

হাম্বা🐮

একটু জিরিয়ে নেন…!


পোলটায় বলা হয়েছে, “আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশ আর পাকিস্তান যদি দুই ভাগ না হয়ে মিলে মিশে এক হয়ে থাকতো, তাহলে সেটা দুই দেশের জন্যেই ভালো হতো?”

১৯%  লোক বলেছে, “হ্যাঁ, আমি তাই মনে করি।” উনিশ শতাংশ লোক! ১৪ হাজার লোকের মধ্যে! যার মানে ১৪০০০ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৪০০০×০.১৯=২৬৬০ জন লোক এখনো মনে করে পাকিস্তান ভাগ না হয়ে একসাথে থাকলে অনেক ভালো হতো! 

এই ব্যাপারটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ! ১৯৭১ সালের এত বড় গণহত্যার পরেও কেনো পাকিস্তান ভাগকে এরা সমর্থন করতে পারে না? আমি শুধু ভাবি আর বের করার চেষ্টা করি মূল প্যাঁচটা আসলে কোন জায়গায়? বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ কি তারা শোনেনি?!

“ভাইয়েরা আমার,আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন…” 

 

প্রথমে চলেন আমরা ক্লাসিফাই করি পাকিস্তানকে সাপোর্ট করে এমন কয়টা টাইপ এর সাপোর্টার আছে?

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এ একটা আর্টিকেল প্রকাশিত হইসিলো “Inside the mind of the Bangladeshis supporting Pakistan cricket team.” ওইখানে এদেরকে চারটা ভাগে ভাগ করা হইসে।

১. মিরপুরের আশেপাশে উর্দুভাষী অনেক বিহারী লোকজন থাকে, ওদের একটা বড় অংশ মিরপুরে গিয়ে পাকিস্তানকে সাপোর্ট করছে।

এইটা তাও মানা যায়, বিহারীদের জীবন সম্পর্কে জানতে হইলে আমি অবশ্যই  রিকমেন্ড করবো “ইতি, তোমারই ঢাকা” এর একটা এপিসোড ‘Jinnah is dead’। ওইখানে বিহারী বনাম বাংলাদেশীর যে একটা জাতীয়তার দ্বন্দ্ব, এটা খুবই ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলছে।

২. ১৯৯০-২০০০ এর সময়টাতে কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট অতটা ভালো ছিল না। কিন্তু তখনও বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ ছিল। ওরা তখন তাহলে কাকে সাপোর্ট করবে! বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা এশিয়ান টিম গুলোকেই সাপোর্ট করতো। এর মধ্যে ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তান অনেক বেশি বিখ্যাত ছিলো। এইখান থেকে মানুষের পাকিস্তানের ক্রিকেটের প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা জন্মে এবং ওই সময়টা কিন্তু ওয়াকার ইউনুস (Waqar Younis), ওয়াসিম আকরাম (Wasim Akram), শোয়েব আখতার (Shoaib Akhtar), সাকলাইন মুশতাক (Saqlain Mushtaq) সহ এমন এমন মহারথীরা খেলতেছিলো যারা পরবর্তী কয়েক দশকে ক্রিকেটের অনেক বোলিং কিংবা অনেক ধরনের পন্থার একেকজন pioneer ছিলেন। রিভার্স সুইং (Reverse swing) বলেন, দুসরা (Doosra) বলেন, এসবকিছু পাকিস্তান বোলারদের কাছ থেকে আসছে। তাই, স্কিলগত দিক থেকে ওদেরকে ভালোবাসে, এমন মানুষ বাংলাদেশে আছে।

৩. এই টাইপটা খুবই ইন্টারেস্টিং! ওরা দাবি করে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ভালো খেলতেছে না, এবং আমরা আমাদের রাগ ও হতাশা থেকে অন্য একটা টিমকে সাপোর্ট করতেছি। এমনকি এই জায়গায় যদি পাকিস্তান না হয়ে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড হইতো, ওদের জার্সি পরে ওরা এখানে আসতো!

পাকিস্তানকে সাপোর্ট করে এমন এক বাংলাদেশি তরুণের বক্তব্য,

ছবি দেইখা তো আর শুনবেন না কী বলতেছি, বাম পাশের লেখাগুলা পড়েন…

“আজকে যদি এখানে অস্ট্রেলিয়া থাকতো, তাহলে আমি অস্ট্রেলিয়াকেই সাপোর্ট করতাম। কারণ হচ্ছে আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টে প্রব্লেম আছে।একটা টুর্নামেন্ট গেছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup) এ গেছে, সেখানে তো কোনো রেসপন্স পায় নাই ভালো। তারপরেও যখন মিরপুর মাঠে খেলা হচ্ছে, একটা সিনিয়র প্লেয়ার শুধু মাহমুদুল্লাহ। এদিকে মুশফিক নিজেরেই বিশ্রামে দিছে মুশফিক নিজেই জানে না। কোনো সিনিয়র প্লেয়ার নাই, তারপর সব জুনিয়র প্লেয়ার দিয়ে খেলানো, এটা উচিত না।”

আর বাংলাদেশ যেরকম টি-টোয়েন্টি (T20) খেলছে, এটা দিয়ে ওদেরকে খুব একটা দোষ দেওয়ারও কিছু নাই।

৪. এটা অনেকটা অ্যান্টি ইন্ডিয়া সাপোর্ট (Anti-India Support) বলা যায়। বাংলাদেশের বেশ বড় একটা অংশ মনে করে ইন্ডিয়া ক্রিকেট খেলার মধ্যে আনফেয়ার কিছু সুবিধা নিতেছে। ICC কে অনেকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলও বলে। সেই ২০১৫ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে নো বল কন্ট্রোভার্সির পর থেকে মানুষ ইন্ডিয়ার প্রতি বিশ্বাস একদমই হারিয়ে ফেলছে।

এবং “শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু”, এই নীতিতে অনেকেই পাকিস্তানকে সাপোর্ট করা শুরু করে।

 

ক্রিকেটে যদি সীমাবদ্ধ থাকতো, তাহলেও একটা কথা ছিলো! আমার এখানে যেরকম একজন কমেন্ট করছে,

“বাজেটে ঢাকার বরাদ্দ আর চট্টগ্রামের বরাদ্দের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য, অথচ চট্টগ্রাম থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয়। এখন চট্টগ্রামের মানুষ আলাদা দেশ চাইলে আপনি তা সমর্থন করবেন?” এটা দিয়ে অনেকটা বোঝানো হইতেছে পূর্ব পাকিস্তান যে সেই সময় অনেক বেশি রাজস্ব দিতো পশ্চিম পাকিস্তানকে, তাই বলেই যে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা আদায় করার চেষ্টা করছে, এটাকে উনি nullify করার চেষ্টা করতেছেন। আমি জানি খুবই বিদঘুটে একটা লজিক!

কী অবস্থা, গেদুরা?

কিটো ভাইয়ের এই সেলফিতে কিটো ভাই ছাড়া অন্য আর সব মানুষ যে লেভেল এর অপ্রাসঙ্গিক, আপনার এই প্রশ্নটা ঠিক সেই লেভেল এর অপ্রাসঙ্গিক!

 

তার আগে একটু প্রুভ করা দরকার, পাকিস্তানকে হেইট করার পিছনে আসলে কোন কোন লজিক গুলো থাকতে পারে।

একটা কারণ তো হচ্ছে পাকিস্তান খুবই ঘাউরা একটা রাষ্ট্র বা জাতি। তার কারণ পাকিস্তান বাংলাদেশে করা গণহত্যার জন্য এখনও পর্যন্ত একটা বারের জন্যেও অফিসিয়ালি ক্ষমা চায় নাই। দেখেন, একটা গণহত্যার জন্যে ক্ষমা চাওয়া কিন্তু এতটা কঠিন কোনো কাজ না এবং এর উদাহরণ ভূরি ভূরি আছে ইতিহাসের মধ্যে। এই যেমন জুনের ৩ তারিখ, ২০২০; বেলজিয়াম এর কিং ফিলিপে (Philippe of Belgium) কিন্তু ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর কাছে অফিসিয়ালি ক্ষমা চাইসে। বেশ বড় সময়ের জন্যে বেলজিয়াম সেখানে একটা উপনিবেশ স্থাপন করছিলো এবং সেখানকার লোকজনকে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করছে। খেয়াল করে দেখবেন, এই ক্ষমাটা কিন্তু বেলজিয়াম চাইসে  কঙ্গোর স্বাধীনতার ৬০ বছর পরে এবং বেলজিয়াম কঙ্গোতে যে উপনিবেশ স্থাপন করছে, ঐটার ১১২ বছর পরে! বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হইসে এখন পর্যন্ত কত বছর হইসে, একটু খেয়াল করে দেখবেন। এখনও কিন্তু সময় আছে, কিন্তু পাকিস্তান চায় নাই।

শুধু এইটা না। রোয়ানডান যে জেনোসাইট (Rwandan genocide) টা হইসে, যেখানে ১০০ দিনে প্রায় ৮ লাখ এর মত মানুষ মারা গেছে, এটা মোকাবেলা করার জন্যে USA যথাযথ ব্যবস্থা নেয় নাই বলে ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটন (Bill Clinton) নিজে ক্ষমা চাইসে।

২০১৬ সালে তাইওয়ান (Taiwan) এর প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন (Tsai Ing-wen), উনি তাইওয়ান এর আদিবাসী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন, ওদের সাথে করা বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের কারণে।

 

আয়ারল্যান্ডে একটা সিস্টেম চালু করা হইসিলো, যার নাম “মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হোমস”। এই ঘর গুলোতে যেসব মেয়েদের বিয়ে হয় নাই, ওদেরকে নিয়ে রাখা হইতো এবং ওদেরকে দিয়ে বাচ্চা পয়দা করানো হইতো, ওদেরকে আন এথিক্যাল কিছু ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করানো হইতো এবং বাচ্চা হওয়ার পর জোর করে ওই বাচ্চাটাকে ওদের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে adoption এর জন্যে দেওয়া হইতো। এই কাজটার জন্যে জানুয়ারি ২০২১ এ আয়ারল্যান্ড অফিসিয়ালি ক্ষমা প্রার্থনা করছে। তাই অফিসিয়ালি ক্ষমা প্রার্থনা করা কিন্তু এমন কোনো কঠিন কাজ না, যদি আপনি একটু কম ঘাড় তেড়া হন!

পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ২০১৩ থেকে ২০১৭, এই সময়টাতে অনেক খারাপ পর্যায়ে ছিলো! ২০১৩ সালে কী হইসিলো একটু মনে করেন, আবদুল কাদের মোল্লা, উনাকে তো প্রথমে যাবৎ জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হইছে এবং এর পরেই কিন্তু শাহবাগ আন্দোলন এবং অনেক বড় একটা গণ আন্দোলনের সূচনা হইলো। শেষ পর্যন্ত উনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হইসে। এটা নিয়ে কিন্তু পাকিস্তান চরম রাগ সহকারে রিয়েক্ট করছে! পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ এটার জন্যে শোক প্রকাশ করছে।

এবং উনাদের ইন্টেরিয়র মিনিস্টার চৌধুরী নিসার আলি খান (Chaudhary Nisar Ali Khan),

উনি বলেছিলেন, “The whole nation is feeling sad over this tragic incident.” ওদের পুরা জাতি এই ঘটনাতে শোক প্রকাশ করতেছে! জামাতে ইসলামী পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে কিন্তু ১৯৭১ সালে একসাথে কাজ করছে এবং ওরা এখনো সেই জটটাকে খুলতে সক্ষম হয় নাই। ২০১৬ সালের মে মাসে মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দেওয়া হইসে এবং এটার পরেও পাকিস্তান কিন্তু বলছে ওরা এই ঘটনায়  গভীরভাবে দুঃখিত এবং এটা পুরা পাকিস্তান জাতীয় সংসদ সাপোর্ট করছে।

এখন বাংলাদেশ কী করবে বলেন! প্রথম কথা, একটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আপনি আরেকটা দেশ হয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইতেছেন, এই জিনিসটা কখনোই ঠিক না। আপনি একটা গণহত্যা চালাইছেন ১৯৭১ সালে, ওইটাকে আবার জাস্টিফাই করার চেষ্টা করতেছেন ২০১৩ ও ২০১৬ তে আইসা! তার উপর আপনি কোনো ক্ষমা চান নাই অফিসিয়ালি! এটা ঘাড় তেড়ামির একটা উৎকৃষ্ট সংজ্ঞা। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে এই ধরনের অবস্থান নেওয়ার কারণে সেপ্টেম্বর ২০১৬ তে যে সার্ক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো, বাংলাদেশ ঐটাতে এটেন্ড করবেনা বলে জানিয়েছিল।

তো বুঝতেই পারতেছেন পাকিস্তানের ঘাড় তেড়ামির কারণে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান এর মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক কতটা নিম্ন পর্যায়ে নামছিলো তখন!

 

আগে যুদ্ধ করছে, পরে আবার বন্ধু হয়ে গেছে, এরকম কি উদাহরণ নাই পৃথিবীতে? অবশ্যই আছে! UK আর USA এর ক্ষেত্রে দেখেন, USA কিন্তু একসময় ব্রিটেনের কলোনি ছিল।

কিন্তু এখন ওদের মধ্যকার রিলেশনশিপ কিন্তু অনেক ভালো। এই রিলেশনশিপ কে ওরা স্পেশাল রিলেশনশিপ নাম দিছিলো। যেটা পপুলার করছেন উইনস্টন চার্চিল (Winston Churchill)

যে লোকটাকে আমরা ভিলেন হিসেবে জানি ১৯৭১ এর প্রেক্ষাপটে। কিন্তু এই লোকটা UK এবং USA এর মধ্যে সম্পর্ক ভালো করার মধ্যে একটা ভালো অবদান রাখছে। USA এবং ভিয়েতনাম এর মধ্যে যে যুদ্ধ হইসে, সেটা তো আপনারা সবাই জানেন। ওরা দুজনও কিন্তু এখন বেশ ভালো বন্ধু। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর দেশগুলোর মধ্যে তাকান, ফ্রান্স কত্তগুলা যুদ্ধ করছে! নেদারল্যান্ড, পর্তুগালসহ সব দেশ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধে অংশ নিছে, কিন্তু ওদের মধ্যে দেখেন বর্তমানে কত ভালো সম্পর্ক এবং ওরা কত ভালো একটা ইকোনমিক সিস্টেম দাড় করিয়ে ফেলছে। যদিও ব্রেক্সিট (Brexit) এর কথাটা আলাদা।

চট্টগ্রামকে স্বাধীন করতে যাওয়ার অ্যান্টি লজিক হিসেবে একজন খুব ভালো একটা লজিক দিছেন,

Best defence!

“ওই হিসাবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে চুলার উপরে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হবে ডিপ ফ্রিজে।” তাইলে বাংলাদেশে BMD(Bangladesh Meteorological Department) বা আবহাওয়া অধিদপ্তর নামে কারো কোনো দরকার নাই। আমাদের সবার বাসাতেই ডিপ ফ্রিজ আছে, চুলা তো সবার বাসাতেই আছে। কথা সত্য বলছে।

 

তাইলে তো এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন একটা দেশ স্বাধীন হবে কি হবে না, এই জিনিসটা আসলে ডিপেন্ড করে কোন কোন বিষয়ের উপর! এটা খুবই ইম্পর্টেন্ট একটা প্রশ্ন এবং এটা নিয়ে পড়াশোনা করার অনেক বড় একটা জায়গা আছে। আমি খুবই ছোট্ট করে কিছু কথা বলি। এইযে একটা জাতি অন্য একটা জাতি থেকে পৃথক হয়ে যাইতে চায়, এটাকে বলে বিচ্ছিন্নতাবাদ (Separatism)। একারণে দেখবেন বিভিন্ন দেশের মধ্যে যারা সরকার এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেছে, ওদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বলা হয়। এইটা হতে পারে পাকিস্তান এর মধ্যে Lashkar-e-Taiba এর মতো গ্রুপ গুলা। কিংবা মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমারের কিছু গোষ্ঠী।

মেটা স্পেন্সার (Metta Spencer) তার “Separatism: Democracy and Disintegration” এর মধ্যে একটা দেশ বা জাতি স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে মূল যে ৩ টা জিনিসের

 কথা উল্লেখ করছেন, সেগুলো হইতেছে:

১. Emotional Resentment and Hatred

২. Protection from Genocide

৩. Attack on language, culture and religion

মোট কথা, দেশ ভাগটা আসলে জাতীয়তাবাদ এর উপর ভিত্তি করে হইসে। বাংলাদেশী জাতি এবং পাকিস্তানি জাতি, দুটোর জাতিসত্তা ভিন্ন কিন্তু ঢাকায় যে জাতি বাস করে এবং চট্টগ্রামে যে জাতি বাস করে, ওদের মধ্যে জাতিসত্তার প্রেক্ষাপটে কোনো ডিফারেন্স নাই। ওদের সংস্কৃতি একই, ওদের ধর্ম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রেক্ষাপটে একই। তো শুধুমাত্র আপনি যদি ধরে নেন, চট্টগ্রাম বিভাগ রাজস্ব বেশি দিতেছে, এটা চট্টগ্রামের স্বাধীন হওয়ার পক্ষে একমাত্র কারণ হবে না। যদি চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আলাদা হইতো এবং ওদের উপরে দমন পীড়ন চালানো হইতো সেই ৩ টা কন্ডিশন এর মধ্যে, সেই ক্ষেত্রে একটা জিনিস হইতে পারতো! যদিও আমি জানি না চট্টগ্রাম বিভাগ আসলেই রাজস্ব বেশি দেয় কিনা। এটা আমাকে কেও জানাতে পারলে জানায়েন।

 

এখন দেখেন, বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের মধ্যে ইকোনমিক যে তুলনাটা আছে, সেটার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের GDP per capita ৯% বৃদ্ধি পেয়ে ২২২৭ ডলার হইসে, যেখানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১৫৪৩ ডলার। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশের তুলনায় ৭০% ধনী ছিলো। এখন বাংলাদেশ পাকিস্তানের তুলনায় প্রায় ৪৫% বেশি ধনী। গত ২০ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৫০০% বৃদ্ধি পাইসে যেটা পাকিস্তানের প্রায় ২.৫ গুণ! বাংলাদেশে ফরেন কারেন্সির রিজার্ভ যেখানে প্রায় ৫০ বিলিয়ন এর কাছাকাছি, সেখানে জুন ২০২১ পর্যন্ত পাকিস্তানের ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ ১৭.১ বিলিয়ন ডলার মাত্র।

বাংলাদেশ কিন্তু কোনো তুলা উৎপাদন করে না। কিন্তু ওরা তুলা ইমপোর্ট করার মাধ্যমে গার্মেন্টস শিল্পের মধ্যে বড় ধরনের যে একটা ইনকাম আনছে (যদিও এটা নিয়ে বিতর্ক আছে অনেক), তারপরেও বাংলাদেশ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের মতো গ্রোথ করছে। যেখানে পাকিস্তানে কিন্তু ওরা নিজেরা তুলা উৎপাদন করে, তবুও ওদের এই জায়গাটাতে গ্রোথ মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলার। তাই সব মিলিয়ে তুলনা করলে পাকিস্তানের ইকোনমি বাংলাদেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে এবং তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের এখন পাকিস্তানকে নিয়ে আলোচনা করাটাই অনেক ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক।

 

যদি পুরা ব্যাপারটা সার সংক্ষেপ করি,

নম্বর ১. বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার পাকিস্তানি সাপোর্টার আছে এবং অনেক ক্ষেত্রে পাকিস্তান যে ভাগ হয়ে যাওয়া এটাকে তারা সমর্থন করতে রাজি না। তারা চিন্তা করতেছে দুই দেশ একসাথে থাকলে ভালো হইতো। এই জিনিসটা কেন পাকিস্তান ডিজার্ভ করে না সেটা এখনকার কেস এর সিনারিওতে, যুদ্ধাপরাধীদের উদাহরণ এবং পাকিস্তানের গণহত্যার অফিসিয়াল ক্ষমা না চাওয়া দিয়ে ব্যাখ্যা করলাম। 

নম্বর ২. পাকিস্তানের ক্ষমা না চাওয়াটা কেনো ঘাড় তেড়ামির একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ, সেটা অন্যান্য দেশের ক্ষমা চাওয়ার এক্সাম্পল এবং ক্ষমা চাওয়াটা যে যেকোনো সময় করা যায় এবং এটা খুবই সহজ একটা কাজ, সেই জিনিসটা প্রমাণ করেছি।

নম্বর ৩. কেবলমাত্র অর্থনীতি যে একটা জাতিসত্তার জন্যে আলাদা স্বাধীনতা চাওয়ার একমাত্র নিয়ামক না, এর পিছনে আরো অনেকগুলো জিনিস কাজ করে, এই ব্যাপারটা চট্টগ্রামের সেই কমেন্টের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হইসে।

নম্বর ৪. সবশেষে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান এর ইকোনমিক সিস্টেম এর তুলনামূলক যে আলোচনা আছে, সেটার মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হইসে যে বাংলাদেশের জন্যে পাকিস্তান নিয়ে ডিসকাস করাটা এখন কোন লেভেলের অপ্রাসঙ্গিক। তো মূল কথা এই পর্যন্তই ছিল।

 

এখন আমরা যাবো মিম রিভিউ তে।

গত কয়েকদিন যাবৎ গ্রুপে খালিদ ফারহান ভাইকে নিয়ে অনেক কথাবার্তা হইতেছিল। চলেন দেখি কী হইসে!

১.অনেকেই এই আপুকে খালিদ ফারহান ভাই এর যমজ বোন বলতেছেন এবং এই নিয়ে প্রচুর মিমও হইসে!

তবে আমি এটা সিউর হয়ে বলে দিতে পারতেছি খালিদ ফারহান ভাইয়ের সামনে আরো অনেক যমজ ভাই আর বোন তৈরি হবে। এই ব্যাপারটা নিয়ে আমার মধ্যে বিন্দু পরিমাণ সন্দেহ নাই…

 

২. ধ্রুব রাঠি (Dhruv Rathee) বিয়ে করছে, ভেরি গুড নিউজ। আমার কাছে ওই কাপলটা আসলেই অনেক ভালো লাগে, মিথ্যা কথা বলবো না। ওদের ভ্লগ আমি দেখি মাঝে মাঝে। ওরা বেশ ভালো, সুন্দর কাপল। তবে এটাকে কপি করতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নাই। আমার আম্মু আমাকে পিটায়া বাসা থেকে বের করে দিতে পারে। এই দায়িত্ব গুরুজনদের হাতে ছেড়ে দেওয়াটাই ভালো!

৩.

আমি আসলে কি বলবো! মানে আমি আশা হারায়া ফেলছি যে বাংলাদেশ ওডিআই একটা ওয়ার্ল্ড কাপ জিতবে, এটা কবে হবে আমি জানি না, তাই আমি এখন হাইব্রিড মোডে চলে গেছি! পডকাস্ট এর মধ্যে মাইক স্ট্যান্ড লাগায়া সবকিছু করা হবে! সে এখনো উপরে আছে, আমার দিকে তাকায়া! আর মেইন ভিডিও আগের মতোই করা হবে। ব্যাপার না আপনারা আশা করতে থাকেন বাংলাদেশ হয়তো একসময় ওডিআই ওয়ার্ল্ডকাপ জিতবে, তখন বাংলাদেশ টিমের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক আমি আমার প্রেয়সীকে বিসর্জন দিবো!

আজকে এই পর্যন্তই! ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

 

পুরো ভিডিও দেখেন ইউটিউবে!

Research Affiliates:

Labid Rahat: https://www.youtube.com/channel/UCTio…

Alif Arshad: https://www.facebook.com/alif.arshad.b

 

For Gaining more knowledge on this topic:-

Country comparison Bangladesh vs Pakistan

Bangladesh’s Economy: What Did It Do Differently To Ride Out the Pandemic?

Aid from Bangladesh

Why Bangladesh’s economy is growing much faster than Pakistan’s – and what India has to do with that

Why do Bangladeshi’s hate India?

Why Pakistan cannot say sorry to Bangladesh

How Bangladeshis see India

Old Enemies Become Friends: U.S. and Vietnam

Anglo-French Wars

List of wars involving the Netherlands

List of wars involving France

Inside the mind of the Bangladeshis supporting Pakistan cricket team

Time for Pakistan to Apologize to Bangladesh

Written by

Girgiti

23 Posts

We're Girgiti. We provide blog managing services to renowned YouTubers. Currently working with Enayet Chowdhury. Hoping to enhance the working area soon.E-mail: [email protected] | Follow us on facebook for regular post updates of this blog: Girgiti
View all posts

1 thought on “২০ ভাগ লোক কেন এখনো পাকিস্তানকে সমর্থন করে? Support for Pakistan | Explained by Enayet Chowdhury”

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *